-
জাতীয় ব্যাডমিন্টনে শাপলার ত্রি-মুকুট অক্ষুণ্ন
January 31st, 2018সুজা উদ্দিন, পাবনা থেকে
বিডিস্পোর্টস২৪ ডটকম
পাবনা, ৩১ জানুয়ারি: জাতীয় ব্যাডমিন্টনে ত্রি-মুকুট অক্ষুণ্ন রেখেছেন পাবনার মেয়ে শাপলা আক্তার। পাবনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের ৩৫তম আসরে বাংলাদেশ আনসারের হয়ে মহিলা একক, দ্বৈত ও মিশ্র দ্বৈতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এ কৃতি শাটলার। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে ৬টি জাতীয় আসর ও একটি বাংলাদেশ গেমসে চ্যাম্পিয়নসহ পাঁচবার ত্রি-মুকুট জয়ের বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি।
বিয়ের পর নিজের শহরে অর্জিত তার এ ত্রি-মুকুট শাপলা আনন্দাশ্রু ফেলে তার স্বামী ও কোচ অহিদুজ্জামান রাজুসহ শ্বশুরবাড়ির সবাইকে উৎসর্গ করেছেন।
চারটিতে চ্যাম্পিয়ন ও তিনটিতে রানার্সআপ হয়ে আসরে দলগত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আনসার। দুটিতে রানার্সআপ হয়ে আসরে দলগত রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
পুরুষ এককে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সালমান। গত আসরে সেনাবাহিনীর এলিনা সুলতানাকে হারিয়ে ত্রি-মুকুট নিশ্চিত করেছিলেন এ তারকা শাটলার। প্রতিদ্বন্দ্বী এলিনার সাথে এবারো দেখা হয় ফাইনালে। তবে এবার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেননি এলিনা। হেরে যান সরাসরি ২-০ (২১-১৫, ২১-১২) সেটে। গতবারের মত এবারো রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে।
একইদিন সকালে সেমিফাইনালে সেনাবাহিনীর বৃষ্টি খাতুনকে ২-০ সেটে পরাজিত করেন শাপলা। এলিনা সেমিফাইনালে হারান একই দলের রেহানা খাতুনকে ২-০ সেটে।
নিজের শহরে এটি শাপলার দ্বিতীয়বারের মত জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ। পাবনায় ২০১১ সালে ত্রি-মুকুট অর্জন করে সুনাম অর্জন করেন। এবারের অর্জনে পাবনাকে যেমন স্মরণীয় করে রাখলেন, তেমনি পাবনাবাসীর কাছে বরণীয় হলেন। “নিজের এলাকায় চ্যাম্পিয়ন, তারপরে ত্রি-মুকুট। এটা নিশ্চয় বড় অর্জন। খুব ভালো লাগছে। আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ এ অর্জনের জন্য।” ম্যাচ শেষে মুখে স্ফীত হাসি নিয়ে শাপলার অভিব্যক্তি। তার এ নৈপূণ্যকে ধরে রাখতে চান বলে জানান তিনি।
স্টেডিয়াম থেকে মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটার পথ তার বাড়ির দূরত্ব, কৃষ্ণপুর মহল্লা। তার দুই বোন নিজ চোখে দেখলেন ছোট বোনের কৃতিত্ব। গত বছরের ডিসেম্বরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ৫ বোনের মধ্যে সবার ছোট শাপলা। তার স্বামী ও আনসার দলের কোচ এক সময়ে তারকা শাটলার অহিদুজ্জামান রাজু গর্ববোধ করেন স্ত্রীর এমন অর্জনে। “সত্যিই আমি আবেগ ধরে রাখতে পারছি না। বিয়ের পর সে যে পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পেরেছে এটা বিস্ময়ের ব্যাপার। আমার গর্বে বুক ভরে আসছে।” ত্রি-মুকুট তাকে উৎসর্গ করায় শাপলার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।
২০০৭ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে এককে চ্যাম্পিয়ন দিয়ে শুরু শাপলার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বিভিন্ন দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন জাতীয়, সামার র্যাঙ্কিং, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস টুর্নামেন্টে। ঝুড়িতে ভরেছেন অনেক পদক। ২০০৯, ২০১১, ২০১৩, ২০১৬ ও এবারের আসর এবং ২০১৩ বাংলাদেশ গেমসে ত্রি-মুকুট জয় করেন। এছাড়া ২০১০ ও ২০১৪ তে রয়েছে দ্বৈতে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা। পেছনের সুখ-স্মৃতি নিয়ে আরো অনেক দূরে দৃষ্টি মিষ্টভাষী শাপলা আক্তারের।
বিডিস্পোর্টস২৪ ডটকম/এমএকে