-
যুব গেমসের বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা সোমবার থেকে
January 7th, 2018ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিডিস্পোর্টস২৪ ডটকম
ঢাকা, ০৭ জানুয়ারি: প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ খুঁজে বের করতে প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত বাংলাদেশ যুব গেমস-২০১৮’র জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দেশের সব ক’টি উপজেলার অংশগ্রহণে ৬৪টি জেলায় একযোগে এই প্রতিযোগিতা গত ২৪ ডিসেম্বরে সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আগামী ৮ জানুয়ারি সোমবার থেকে মশাল প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে।জেলা পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী ২৩২১০ জন প্রতিযোগী থেকে বাছাইকৃত ৩৪৭৩ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা।
দেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং আবাসন থাকায় সোমবার থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় শহরে এই তিনটি বিভাগের বিভাগীয় পর্যায়ের সকল ডিসিপ্লিন একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের অন্য ৫টি বিভাগে সব ক’টি খেলার ভৌত অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা এবং আবাসন সুবিধা না থাকায় এই ৫টি বিভাগের বিভাগীয় পর্যায়ের খেলা বিকেন্দ্রিকরণ করা হয়েছে।
রবিশাল বিভাগের প্রতিযোগিতা বরিশাল ছাড়াও বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুরও ঝালকাঠিতে অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহী বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা রাজশাহী ছাড়াও বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর ও পাবনায় বিভাগীয় পর্যায়ের খেলা আয়োজন করবে।
খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা সেখানে খুলনা ছাড়াও নড়াইল, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া বিভাগীয় পর্যায়ের গেমস আয়োজন করবে। রংপুর বিভাগীয় শহর ছাড়াও দিনাজপুরে হবে এই বিভাগের প্রতিযোগিতা। ময়মনসিংহ বিভাগের খেলা ময়মনসিংহ ছাড়াও শেরপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
দলগত এবং ব্যক্তিগত মিলে ১১টি ডিসিপ্লিনে সর্বাধিক ৭৭৮ ক্রীড়াবিদের অংশগ্রহণে ঢাকা বিভাগের প্রতিযোগিতার জন্য বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংলগ্ন ৭টি ক্রীড়া স্থাপনা, মিরপুরের ২টি আন্তর্জাতিক মানের ভেন্যু এবং সাভারের বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার সকাল ১০টায় শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যুব গেমসের বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শুরু হবে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার এম বজলুল করিম চৌধুরী উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিভাগের প্রতিযোগিতা। শুভেচ্ছাদূত হিসেবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সাবেক কৃতি ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ও জিমনেশিয়াম, সাগরিকা মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম সুইমিং পুলও পাঁচলাইশে জাতিসংঘ পার্ক পুল, শিশিরতলা সিআরবিতে ১০ টি ডিসিপ্লিনে প্রতিযোগিতা হবে। ৬টি ডিসিপ্লিনে সিলেট বিভাগীয় পর্যায়ের খেলা হবে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম ও আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে।
৮ জানুয়ারি সোমবার মশাল প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যুব গেমসের বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে আসরটি সম্পন্ন হবে ১৩ জানুয়ারি। তবে পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা থাকায় ঢাকা বিভাগের প্রতিযোগিতা ১০ জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন হবে।
এই সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা যুব গেমসের শুভেচ্ছাদূত হয়ে গেমসের সাফল্য কামনা করে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় মাশরাফি বলেন, ‘আমাকে বাংলাদেশ যুব গেমসের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর করার জন্য বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ। এটা একটা নুতন মাইলফলক। এই ধরনের উদ্যোগ নেয়ায় বাংলাদেশের যুব ক্রীড়াবিদদের ভবিষ্যতে অলিম্পিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’
অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের যাতায়াত, আবাসন ও হাত খরচার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ইতোমধ্যে স্ব স্ব জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে বন্টন করেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন। এ ছাড়া অতিরিক্ত বরাদ্দ হিসেবে জেলা দল গঠনে প্রতিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থাসমূহকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা ব্রান্ডিংয়ের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দও ইতোমধ্যে দিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন।
বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা সরেজমিন পরিদর্শনে যাবেন বিওএ’র সভাপতি ও সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক এসবিপি, এনডিসি, পিএসসি এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
আজ রোববার অলিম্পিক ভবনের ডাচ-বাংলা অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যুব গেমসের বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ যুব গেমস-২০১৮’র স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মিকু। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহেদ রেজা, সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ এবং উপ-মহাসচিব আসাদুজ্জামান কোহিনুর উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আশিকুর রহমান মিকু বলেন, এ গেমস আয়োজনে সারাদেশের খেলাধুলার একটি চিত্র আমাদের কাছে দৃশ্যমান হয়েছে।
সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন কোন জায়গায় অবস্থান করছে আমরা জানতাম না। এই প্রথমবারের মতো এই গেমস আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি ফেডারেশনগুলো কতটা ইনঅ্যাকটিভ। এই গেমস আমাদের আয়োজনের কথা নয়, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাজ হচ্ছে এ ধরনের আয়োজনে এগিয়ে আসা।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে প্রজেক্টরের মাধ্যমে মাশরাফি বিন মর্তুজার ভিডিও বার্তা দেখানো হয়।
বিডিস্পোর্টস২৪ ডটকম/এমএকে