-
শেষ বলে নাটকীয় জয়ে শিরোপা অক্ষুণ্ন ভারতের
September 29th, 2018ক্রীড়া ডেস্ক
বিডিস্পোর্টস২৪ ডটকম
দুবাই, ২৮ সেপ্টেম্বর: পারলেন না মাশরাফি বিন মর্তুজা। তারই অসাধারণ নেতৃত্ব গুণে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ তৃতীয় বারের মতো ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। কিন্তু পারলেন না মাশরাফি। পারলো না টাইগাররা। শেষ বলে জয়ের জন্য ১ রান প্রয়োজন ছিলো ভারতের। মাহামুদুল্লাহর বলে কেদার যাদব ব্যাটে বল না লাগাতে পারলেও বল তার প্যাডে লেগে শর্ট ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে সীমানাছাড়া হলে ৩ উইকেটের নাটকীয় জয়ে শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখে ভারত।
১৪ আসরের মধ্যে ভারত এ নিয়ে সাতবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলো। ভারত এর আগে ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯০-৯১, ১৯৯৫, ২০১০, ২০১৬ এশিয়া কাপের আসরের শিরোপা জয় করে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ বার শিরোপা জয় করেছে শ্রীলংকা। দুইবার শিরোপা ঘরে তুলেছে পাকিস্তান। অপরদিকে বাংলাদেশ তিনবার ফাইনালে খেললেও একবারের জন্যই শিরোপা জয় করতে পারেনি।
২০১২ সালে ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে মাত্র ২ রানে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ভারতের কাছে ফাইনালে ৮ উইকেটে হেরে যায়।
আর এবার শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ভারতের কাছে ৩ উইকেটে হেরে যাওয়ায় এশিয়ার কাপের শিরোপা অধরাই রয়ে গেলো টাইগারদের।
বাংলাদেশের দেয়া ২২৩ রানে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২২৩ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে ভারত। এতে ৩ উইকেটে জিতে যায় তারা।
ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন দিনেশ কার্তিক, ধোনি ৩৬, জাদেজা ২৩ এবং ভুবনেশ্বর কুমার ২১ রান করে আউট হন।
কেদার যাদব ২৩ রানে এবং কুলদীপ যাদব ৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে পেসার মোস্তাফিজুর রহমান এবং রুবেল হোসেন দুটি করে এবং মাশরাফি, মাহামুদুল্লাহ এবং নাজমুল ইসলাম অপু একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ১৪তম এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৩ ওভারে ২২২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে জেতার জন্য ভারতের প্রয়োজন পড়ে ২২৩ রান।
আজ নিয়মিত ওপেনার লিটন দাসের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট করতে নামেন তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। এই দুই ব্যাটসম্যান উদ্বোধনী জুটিতে ২০.৫ ওভার মোকাবেলায় ১২০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দারুণ সূচনা এনে দেন।
উদ্বোধনী জুটিতে ১২০ রানের দারুণ সূচনা সত্ত্বেও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ গড়তে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।
মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৯ বলে ৩২ রান করে আউট হন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২১ রান করেন ওপেনার লিটন দাস। ক্যারিয়ারের ১৮তম ওয়ানডে ম্যাচে এসে প্রথম শতরানের দেখা পেলেন এই টাইগার ওপেনার। গত ১৭টি ওয়ানডে ম্যাচে শতরান তো দূরের কথা কোনো ফিফটিও ছিল না লিটন দাসের। এতদিন তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৪১ রান। আজ উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে ১১৭ বলে ১২টি বাউন্ডারি ও দুটি বিশাল ছক্কার সাহায্যে ১২১ রান করে আউট হন লিটন দাস।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নামা সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। এদিন বাকি ৭ ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন।
এর মধ্যে ইমরুল কায়েস ২, মুশফিকুর রহীম ৫, মো: মিথুন ২, মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৭ নম্বরে ব্যাট করতে নামা সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। এদিন বাকি ৭ ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন।
এর মধ্যে ইমরুল কায়েস ২, মুশফিকুর রহীম ৫, মো: মিথুন ২, মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ৪, মাশরাফি ৭, নাজমুল ইসলাম অপু ৭ এবং রুবেল হোসেন ০ রানে বিদায় নেন। মোস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত থাকেন ২ রানে।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে কুলদীপ যাদব তিনটি, কেদার যাদব ২টি এবং যুজবেন্দ্র চাহাল ও জাসপ্রিত বুমরাহ একটি করে উইকেট। ভারতের ক্রিকেটার আজ দারুণ ফিল্ডিং করেছেন। বাংলাদেশের তিন-তিনজন ব্যাটসম্যান রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন। এরা হলেন- মোহাম্মদ মিথুন, সৌম্য সরকার এবং নাজমুল ইসলাম অপু।
ম্যাচসেরা হন বাংলাদেশের ওপেনার লিটন দাস। আর সিরিজ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ান।
বিডিস্পোর্টস২৪ ডটকম/বিকে